No menu items!

টিউবারকুলোসিস

Must Read

কেন একজন মানব শিশুর জীবনে প্রথম ১০০০ দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ ?

   কেন একজন মানব শিশুর জীবনে প্রথম ১০০০ দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ ?   গর্ভাবস্থায় মায়ের খাবারের মাধ্যমে শিশু যে পুষ্টি পায়...

মহাত্মা হ্যানিম্যানের আজ ২৬৮তম জন্ম বার্ষিকী

মহাত্মা হ্যানিম্যান  আজ ১০ এপ্রিল রোজ সোমবার, হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার  জনক   ক্রিশ্চিয়ান ফ্রেডিক স্যামুয়েল হ্যানিম্যান এর ২৬৮তম জন্মদিন । শুভ জন্মদিন...

বিশ্ব ঋতুস্রাব স্বাস্থ্যবিধি দিবস

বিশ্ব ঋতুস্রাব স্বাস্থ্যবিধি দিবস ঋতুস্রাব বা পিরিয়ড প্রতিটি নারী ও কিশোরীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের সাথে অঙ্গাঅঙ্গিভাবে জড়িত। কিন্তু এ অতি...

টিউবারকুলোসিস বা যক্ষ্মা শব্দটা এসেছে “রাজক্ষয়” থেকে। ক্ষয় বলার কারণ এতে রোগীরা খুব শীর্ণ হয়ে পড়েন । এর ইংরেজী শব্ধ – Tuberculosis. এটি একটি বায়ু বাহিত সংক্রামক ব্যাধি। মাইকোব্যাকটেরিয়াম টিউবারকুলোসিস (টিউবারকেল ব্যাসিলাস) নামক জীবাণু দ্বারা সৃষ্ট রোগকে টিউবারকুলোসিস বলে।  এটি  অতি সাংঘাটিক প্রাণ নাশক ব্যাধি । এ রোগে আত্রান্ত হলে রোগী ফেকাশে,রক্তশূন্য, দুর্বল, বক্ষ সরু, কাজে কর্ম অনিহা, প্রায়ই কাশি লেগে থাকে । শরীর ক্ষয়, স্বর ভঙ্গ, বিকালে জ্বর, রাত্রে ঘর্ম, দিন দিন শরীর ওজন কমিয়ে যায়, সকালে ও রাত্রে কাশির বৃদ্ধি । কাশির সাথে পুঁজ এর মত শ্লেষ্মা । ফুসফুস হতে উজ্জ্বল বর্ণ  রক্ত আসা।  যক্ষ্মা সবচেয়ে বেশী দেখা যায় ফুসফুসে। পিতা মাতার এ রোগ থাকলে সন্তানদেরও এ রোগ হতে পারে ।

টিউবার কুলোসিস এর প্রকার ভেদ:

টিউবার কুলোসিসকে নিম্ন লিখিতভাবে ভাগ করা যায়। যথা:

১। একিউট টিউবার কুলোসিস- ইহা মানুষকে হঠাৎ আক্রমন করে এবং আক্রান্ত  ব্যক্তি অতিদ্রুত জীর্ন শীর্ন হয়ে যায়।

২। নিউমোনিক থাইসিস- এতে সাধারণত: ফুসফুস আক্রান্ত হয় এবং নিউমোনিয়ার লক্ষণ প্রকাশ পায়।

৩। হেমোরেজিক থাইসিস- ফুসফুস দিয়ে রক্ত উঠে ও মুখ দিয়ে নির্গত হয়।

৪। ফাইব্রয়েড থাইসিস- নিউমোনিয়া, প্লুরিসি প্রভৃতি রোগের পুরাতন অবস্থায় ইহা সৃষ্টি হয়।

৫। স্ক্রুফুলা থাইসিস- গন্ডমালা রোগ হতে ইহা সৃষ্টি হয়।

৬। ল্যারিনজিয়াল থাইসিস- রোগীর কণ্ঠনারীতে গুটিকা হয়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়।

টিউবারকুলোসিস এর কারণ ও উপসর্গ:

১। মাইকো ব্যাকটেরিয়াম টিউবার কুলোসিস নামক জীবাণু সংক্রমনই এর মুল কারণ। দেহের প্রতিরোধ শক্তি কমে গেলেই এরা রোগ সৃষ্টি করার সুযোগ পায়।

২। অনিয়মিত আহার, পুষ্টিকর খাদ্য ও ভিটিামিন যুক্ত খাদ্যের অভাব, শৃংখলবিহিন জীবন যাপনের ফলে এই রোগ সৃষ্টি হয়।

৩। নোংরা পরিবেশ, স্যাঁত স্যেঁতে, আলোবাতাস হীন পরিবেশ, কঠোর পরিশ্রম ।  খাদ্যের অভাব, ক্রমাগত দারিদ্র, অভাব অনটন, দুশ্চিন্তা, প্রভৃতি আনুষঙ্গিক কারণে এই রোগ কৃষ্টি হয়।

৪। বংশগত পীড়া ভোগার ইতিহাস।

৫। নৈতিক অবনতি, পুন:পুন: গর্ভধারণ, একপাত্রে পানাহার প্রভৃতি।

সাধারণ উপসর্গ:

সাধারনত-তিন সপ্তাহের বেশি কাশি,জ্বর, কাশির সাথে কফ এবং মাঝে মাঝে রক্ত বের হওয়া, ওজন কমে যাওয়া, বুকে ব্যথা, দুর্বলতা ও ক্ষুধামন্দা ইত্যাদি ফুসফুসের যক্ষার প্রধান উপসর্গ।

জটিল উপসর্গ সমূহ :

১। যক্ষ্মার সঙ্গে প্লুরিসির লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

২। জীবাণুর আক্রমনে প্লরাতে ফুটা হইয়া যায়, প্লুরায় পুঁজ হয়।

৩। আন্ত্রিক যক্ষ্মার সৃষ্টি হতে পারে।

৪। দেহের বিভিন্ন স্থানে টিউবারকল দেখা যায়।

৫। দেহ জীর্ণ শীর্ন, দুর্বল, মস্তিস্ক ঝিল্লীর প্রদাহ, মুখ দিয়া রক্ত উঠা, অস্ত্র ছিদ্র হয়ে যাওয়া প্রভৃতি লক্ষণ দেখা দেয়।

৬। বুকের রোগ হতে হাত, পা, পেট, পায়ু, কিডনী, ব্রেন প্রভৃতি আক্রান্ত হতে পারে।

৭। পায়ুতে ফিশ্চুলা বা ভগন্দর হয়।

টিউবারকুলোসিস এর প্রতিরোধ ব্যবস্থা:

১। রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া মাত্র যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রে গিয়া রোগ নির্ণয় করতে হবে। যক্ষ্মা রোগ নিশ্চিত হলে রোগীকে হাসপাতালে পাঠাতে হবে। তা সম্ভব না হলে বাড়ীতে একটা পৃথক কামরায় রোগীকে স্বতন্ত্র ভাবে রেখে  চিকিৎসা করতে হবে।

২। রোগীর জন্য পৃথক আসবাব পত্র, থালাবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। রোগীর ব্যবহৃত আসবাবপত্র ও থানাবাসন অন্য কেহ ব্যবহার করতে পারবেনা।

৩। রোগী যেখানে সেখানে কফ, থুথু, শ্লেষ্মা ফেলবেনা। একটি পিকদানীতে রোগীর কফ, থুথু সংগ্রহ করতে হবে এবং বিশোধন ঔষদ দ্বারা বিশোধন করে দূরে কোথাও পুঁতিয়া ফেলতে হবে।

৪। কলকারখানায় আইনের দ্বারা ধূলা ও ধোঁয়া নিবারণের ব্যবস্থা করতে হবে।

৫। বাড়ীর ভিতরে বা বাইরে কোথাও ধুলা বা ঝুল জমিতে দিতে নাই। বাড়ীতে মাছি, তেলাপোকা, পিঁপড়ার উপদ্রব কমাইতে হবে।

৬। রোগীর গৃহে প্রচুর আলোবাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হবে। এমন জায়গায় বাড়ী, ঘর নির্মাণ করতে হবে যাতে সব সময় প্রচুর আলোবাতাস পাওয়া যায়।

৭। নিয়মিত টাটকা ও পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়া উচিত। রাত্রি জাগরণ ও অতিরিক্ত পরিশ্রম বর্জন করতে হবে।

৮। টি বি প্রতিরোধক বি,সি, জি টিকা লইতে হবে। সদ্যজাত শিশু হতে শুরু করে সকলকে পাঁচ  বৎসর অন্তর পরীক্ষা করে যক্ষ্মা প্রতিরোধক ভ্যাকসিন দেওয়া উচিত।

৯। জনসাধারণকে টি.বি রোগের ব্যাপারে স্বাস্থ্য শিক্ষা দিয়ে সচেতন করতে হবে।

উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে – পৃথিবীর যক্ষ্মা রোগীদের এক তৃতীয়াংশেরও বেশী (প্রায় অর্ধেক) ভারতীয় উপমহাদেশবাসী। জীবাণু শরীরে ঢুকলেই সবার যক্ষ্মা হয় না। যাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের ক্ষেত্রে যক্ষ্মা বেশি হয় |

যক্ষার হোমিও চিকিৎসা :

লক্ষণভেদে রোগীদের নিম্ন লিখিত হোমিও ঔষধ গুলো দেওয়া যেতে পারে – টিউবারকিউলিনাম, ক্যালি আয়োড, ষ্ট্যানাম, একালিফা ইন্ডিকা, ফসফরাস, ক্যালি আয়োড ইত্যাদি ঔষধ ব্যবহৃত হয়ে থাকে ।

তথ্য সূত্র: উইকিপিডিয়া, ডা. আবু হোসেন সরকার প্রণীত প্র্যাকটিস অব মেডেসিন বই , অব্যর্থ হোমিওপ্যাথি  চিকিৎসা ,  ইনটারনেট  ও আমাদের ঝিনাইগাতী ফেসবুক পেজ  ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Latest News

কেন একজন মানব শিশুর জীবনে প্রথম ১০০০ দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ ?

   কেন একজন মানব শিশুর জীবনে প্রথম ১০০০ দিন খুব গুরুত্বপূর্ণ ?   গর্ভাবস্থায় মায়ের খাবারের মাধ্যমে শিশু যে পুষ্টি পায়...

More Articles Like This